রবিবার, ২৪ আগস্ট, ২০০৮

সখী এলিটিজম কারে কয়?

Elitism kake bole, ami jani naa -- dhonira doridro loker 'taste' ke opochhondo korle take'i ki elitism bole?
....
Elitism kake bole ? ....income inequality'r birud'dhe lorai korte giye ki class er differential preference er birud'dhe lorai korte hoy ? Utopia te ki manushe manushe pochhondo opochhondo bhed thakte parbe
na ? Polash Rizia othoba Momtaz ke ki amake pochhondo kortei hobe ? Naa kole ki ami 'kharap manush' hoye jabo ?
(Abeer-er chithi theke)

“তোমরা যে বলো দিকস রজনী ভালোবাসা ভালোবাসা, সখী ভালোবাসা কারে কয়”
(রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান থিকা)

রবীন্দ্রনাথ জিগাইছেন ভালোবাসা কারে কয়। আর এদিকে আবীর জিগাইতেছেন এলিটিজম কারে কয়। ভালোবাসা কারে কয় এইটা রবীন্দ্রনাথ হাড়ে হাড়ে বোঝেন, তাই একটা আপাতসরল জিজ্ঞাসা নিজের ওপর ন্যস্ত করছেন। মধ্যবিত্তরে এলিটিজম বোঝানো আর দাদারে ..... শিখানো কি একরকম পণ্ডশ্রম হৈতেছে না?

আজকে আবার আরেক কাণ্ড হৈল। ডিজ্যাবিলিটি’র ওপর দিনব্যাপী একটা সেমিনারে বৈসা থাকতে হৈছিল। সেইখানে শুনতেছিলাম অটিজম (Autism) এর ওপর লেকচার আর ভাবতেছিলাম এলিটিজম নিয়া। অটিজম আর এলিটিজম মিল্যামিশ্যা সন্ধ্যাবেলা আমি হঠাৎ চলৎশক্তিহীন বোধ করলাম। মনে হৈল আমার পেশি যেন সংবেদনশীলতা হারায়া ফেলতেছে। অটিজম থিকা সাবধান, ভাই আবীর!

কেউ যখন কোনো সুবিধাজনক অবস্থানে থাইকা ডিসএডভান্টেজড কোনো শ্রেণীর রূচিকে নির্বাচন/পছন্দ করে, যে পছন্দের মধ্যে অনুমোদন ও করুণার মিশাল থাকে, কখনো প্রমোশনের প্রণোদনা থাকে, কখনো মতাদর্শের প্রেরণা ’বড়’ হয়া থাকে ....তখন সেই সুবিধাজনক অবস্থানে থাকা মানুষটার নির্বাচন/পছন্দের মধ্যে এলিটিজমের ঝুঁকি থাকে। এইটা একটা মধ্যবিত্ত শ্রেণীর সিনড্রম, বাই ডিফল্ট। তবে, প্রত্যেকটা বেটার-অফ শ্রেণীর রূচি-ই তার চেয়ে ওরস-অফ (worse-off) শ্রেণীর রূচির কাছে, কখনো কখনো, মতার সহজাত গরমে, এলিটিস্ট হয়া উঠতে পারে।

আর প্রত্যাখ্যান কিন্তু একটা অনেক কম বিপদজনক অবস্থান। প্রত্যাখ্যানকারীর জন্যও, আবার প্রত্যাখ্যাতের জন্যও। এইখানে আধা গ্রহণবর্জনের সমস্যা তৈয়ার হয় না। মধ্যবিত্ত হৈয়া মমতাজরে অপছন্দ করা একটা স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া। এইখানে কোনোই সমস্যা নাই। কিন্তু যদি আপনের পছন্দ হয়, দুইবার ভাবেন, দেখেন রেফারেন্স কোনখানে।

আয়-বৈষম্যের বিরূদ্ধে সমাজে কারে লড়াই করতে দেখলেন? আমি তো বছর বছর জিনি (Gini Index) বাইড়া যাইতেই দেখি। ভাইবা দেখেন তো, ভিন্নতা বা বৈচিত্র্য বিষয়ে পুঁজিবাদ আর সাম্যবাদের পজিশনে কতটুকু ফারাক আছে? কিন্তু তারপরেও সাবঅল্টার্ন-এর রূচি কখনো কখনো ড্রাইভিং সিটে বৈসা পড়ে। যেমন, একটা উদাহরণ দিই: বাংলাদেশের অডিও ক্যাসেট ব্যবসা এখন গরিব মানুষের রূচি দিয়া নিয়ন্ত্রিত হৈতেছে। ফলে এখন শাকিলা জাফর থিকা মমতাজ অনেক বড় প্রেফারেন্স, গিটার ফালায়া হাসান দোতারা হাতে লৈছে, জেমসের কান্ধে গামছা উঠছে, জিন্স খুইলা আমাদের বিপ্লব গেরুয়া পৈরা মমতাজের লগে ডুয়েট অ্যালবাম করতেছে, রিক্সাওলা আকবর আইসা হিট হয়া যাইতেছে।

এইভাবে, সমাজের একটা সাইলেন্ট এবং এক্সক্লুডেড শ্রেণী নিজেরা নিজেদের বিনোদন ঠিক কৈরা নিছে, সেইখানে তাদের পপুলেশন তাদের শক্তি হৈয়া দাঁড়াইছে...আর তারা মধ্যবিত্তের হাত থিকা অডিও ক্যাসেট ইন্ডাস্ট্রি নিজেদের দখলে নিয়া নিছে। এই কারণেই আমারে মমতাজ লৈয়া থিসিস লেখতে হয়, নির্মলেন্দু গুণের কানে মমতাজের গান পৌঁছায়, আর মৌসুমী কাদের-এর বাসায় মমতাজের ক্যাসেটের কালেকশন তৈয়ার হৈতে থাকে।

মধ্যবিত্ত হিসাবে নিম্নবর্গীয় সংস্কৃতির ধারেকাছে যাওয়ার যে কৃতিত্ব আমরা নিতেছি, এইগুলাই সেইখানে ইনভিজিবল ফ্যাক্টর। আসেন, এইগুলারে উদঘাটন কৈরা আমাদের ‘কৃতিত্বরে’ চ্যালেঞ্জ কৈরা দেখি, কতদূর উনি অম্লান থাকতে পারেন!



ঢাকা, ০৫/০৮/০৫


কোন মন্তব্য নেই: