
ভোরের আবছা আলোয় হাতড়ে হাতড়ে বিছানা থেকে নেমে মিনা হাতাছাড়া জামাটি গায়ে দিল যেটি সে গতরাতেই খাটের কাছে ঝুলিয়ে রেখেছিল, এবং জামার আলগা হাতাগুলোকে ট্রাংকের ভেতর গরুখোঁজা করে খুঁজল। তারপর দেয়ালের হুকগুলিতে, দরজার পেছনে ভালমত খুঁজল, যতদূর সম্ভব শব্দ না করে, যাতে ওর সঙ্গে একই ঘরে ঘুমানো অন্ধ দাদীর ঘুম ভেঙ্গে না যায়। ভোরের আবছা অন্ধকার ওর চোখে সয়ে এলে সে দেখল দাদী ইতিমধ্যেই উঠে গেছে। মিনা রান্নাঘরে গেল, জামার হাতাগুলোর কথা দাদীকে জিজ্ঞেস করার জন্য।
‘ঐগুলো গোসলখানায়’ অন্ধ দাদী বলল। ‘গতকাল সন্ধ্যায় ধুয়ে দিয়েছি’।
গোসলখানায় হাতাদুটো পেল সে, কাঠের কিপে ঝুলছে। তখনও ভেজা সপসপে। মিনা রান্নাঘরে গিয়ে হাতাগুলো চুলার আঁচে মেলে দিল। সামনে অন্ধ দাদী তখন কফি বানাচ্ছে, তার ভাবলেশহীন চোখের মনি স্থির হয়ে আছে বারান্দার কোনার দিকে, যেখানে একসারি ফুলদানির মধ্যে ঔষধি গাছ লাগানো।
‘আর কনো তুমি আমার জিনিষপত্র ধরবে না’, মিনা বলল। ‘এইসব দিনে সূর্যের আলোর কি কোনো বিশ্বাস আছে?’
অন্ধ মহিলা তার মুখ ঘোরাল, মিনার গলার স্বর লক্ষ্য করে।
‘ভুলেই গিয়েছিলাম আজ প্রথম শুক্রবার’, বলল অন্ধ দাদী।
কফি তৈরি হল কিনা বোঝার জন্য দাদী কেতলির উপরে মুখ নিয়ে একটা গভীর নিঃশ্বাস নিল, তারপর চুলা থেকে কফি নামিয়ে রাখল।
‘নিচে একটা কাগজ বিছিয়ে হাতাগুলো শুকাতে দিস, চূলার মেঝে কিন্তু নোংরা’, অন্ধ দাদী বলল।
মিনা চুলার মেঝেয় আঙ্গুল বুলিয়ে দেখল। পাথরগুলো নোংরা ঠিক, তবে নোংরাগুলোও শক্ত হয়ে সেঁটে গেছে মেঝেতে। ফলে হাতাগুলো মেঝেয় না ঘষলে সেখান থেকে নোংরা হাতায় লেগে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই।
‘হাতাগুলো নোংরা হলে তুমি দায়ী থাকবে’, মিনা ওর দাদীকে বলল।
অন্ধ দাদী নিজের জন্য এককাপ কফি ঢালল। ‘তুই রেগে আছিস’, বারান্দার দিকে একটা চেয়ার টেনে নিতে নিতে বলল সে। ‘রাগ নিয়ে প্রার্থনায় গেলে অসম্মান হয়’। কফির কাপটা নিয়ে গোলাপগুলোর সামনের বারান্দার চাতালে বসল দাদী। প্রার্থনা শুরুর তিন নম্বর ঘণ্টাটি বাজলে মিনা চুলার উপর থেকে জামার হাতাগুলো নিয়ে এল এবং তখনও সেগুলো ভেজাই ছিল। সেগুলোই পরল সে। হাতাছাড়া জামা পরে গেলে ফাদার এঞ্জেল ওকে কখনই রুটি দেবেন না। মুখও ধোয় নি সে। তোয়ালে দিয়ে খালি একটু মুছে নিয়েছে। তারপর ঘর থেকে প্রার্থনার বই আর শালটা নিয়ে বেরিয়ে পড়ল রাস্তায়। ফিরে এল মিনিট পনের পর।
‘তুই যেতে যেতে যীশূর শিক্ষা পর্যন্ত শেষ হয়ে যাবে’, গোলাপগুলোর উল্টোদিকের চাতালে বসে দাদী বলল।
মিনা সোজা টয়লেটে ঢুকল। ‘আমি প্রার্থনায় যেতে পারব না’, বলল সে। ‘হাতাগুলো একদম ভেজা আর জামাটাও কোঁচকানো।’ অনুভব করল একটা জিজ্ঞাসু মন তাকে অনসরণ করছে।
‘প্রথম শুক্রবার, আর তুই কিনা প্রার্থনায় যাবি না’, অন্ধ দাদী বিস্মিত।
টয়লেট থেকে ফিরে মিনা নিজের জন্য এককাপ কফি ঢালল এবং বসল দরজার চুনকাম করা কপাটটার উল্টোদিকে, ওর অন্ধ দাদীর পাশে। কফির কাপে চুমুক দিল না।
‘কাঁদছিস তুই!’ অন্ধ মহিলাটি আরো আশ্চর্য হয়ে জিজ্ঞেস করল।
‘কাঁদছি রাগে’, মিনা বলল। আর দাদীর পাশ থেকে উঠে যেতে যেতে বলল, ‘তোমার স্বীকারোক্তি দিতে অবশ্যই চার্চে যাওয়া উচিত, যেহেতু তোমার কারণেই আমার প্রথম-শুক্রবারের প্রার্থনায় যাওয়া হল না।’
অন্ধ দাদী স্থানু হয়ে বসে রইল, মিনা শোবার ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়া পর্যন্ত। তারপর সে হেঁটে গেল বারান্দার শেষ প্রান্ত পর্যন্ত। মিনার রেখে যাওয়া কফির কাপটা তুলে নেয়ার জন্য সতর্কভাবে একটু একটু করে সামনের দিকে বাঁকা হল সে। কাপটিতে আবার কফি ঢালতে ঢালতে বলে চলল:
‘আল্লা জানেন আমার মন পরিষ্কার ছিল।’
শোবার ঘর থেকে মিনার মা বেরিয়ে এল।
‘কার সাথে কথা বলছ তুমি?’ মিনার মা তার অন্ধ মাকে জিজ্ঞেস করে।
‘কারও সাথেই না। তোকে তো বলেছি আমার মাথা খারাপ হতে চলেছে।’
ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে মিনা ওর অন্তর্বাসের বোতাম খুলে তিনটা ছোট ছোট চাবি বের করল, সেগুলো সেফটি পিন দিয়ে ওর জামার সাথে আটকানো ছিল। এর একটা দিয়ে আলমারির নিচের ড্রয়ারটা খুলল এবং কাঠের একটা ছোট বাক্স বের করল। তারপর আরেকটি চাবি দিয়ে ঐ বাক্সটির তালা খুলল। বাক্সটির ভেতর একতাড়া রঙিন কাগজে লেখা চিঠি ছিল, রাবার ব্যান্ড দিয়ে বাঁধা। চিঠির তাড়াটা সে জামার ভেতরে লুকিয়ে নিল এবং বাক্সটি যথাস্থানে রেখে ড্রয়ারটায় তালা লাগিয়ে দিল। তারপর চিঠিগুলো টয়লেটে নিয়ে গিয়ে কমোডে ফেলে দিল।
‘আমি তো ভাবলাম তুই চার্চে চলে গেছিস’, মিনা রান্নাঘরে ঢুকলে ওর মা বলে।
‘নাহ, সে যেতে পারে নি’ অন্ধ দাদী বলে উঠল। ‘আমি শুক্রবারের কথা ভুলে গিয়ে কাল সন্ধ্যায় ওর জামার হাতাগুলো ধুয়ে দিয়েছিলাম।’
‘ওগুলো এখনও ভেজা’, মিনা বিড়বিড় করে।
‘খুব ধকল গেছে এই কয়দিন’, অন্ধ দাদী বলল।
‘ইস্টারের জন্য আমায় দেড়শ গোলাপ বানাতে হবে’, মিনা বলল।
সকাল সকালই সূর্য তেতে উঠল। সাতটা বাজার আগেই মিনা তাদের বসার ঘরে কৃত্রিম গোলাপের দোকানটা সাজিয়ে ফেলল: গোলাপের পাপড়ি এবং তারভর্তি একটা বাক্স, আরেক বাক্সে ক্রেপ কাগজ, দুইটি কাঁচি, একটা সূতাগুটি এবং এক পাত্র আঠা। এর কিছু পরই ত্রিনিদাদ ঢুকে সেখানে, তার হাতে পেস্টবোর্ডের বাক্সটা ধরা, জিজ্ঞেস করে মিনা কেন প্রার্থনায় যায় নি।
‘আমার জামার হাতা ছিল না’ মিনা বলে ওর বান্ধবীকে।
‘কারোটা ধার নিতে পারতি’, ত্রিনিদাদ বলে।
মিনা একটা চেয়ার টেনে পাপড়ির বাক্সটির কাছে বসে।
‘আমার দেরি হয়ে গিয়েছিল’, বলে সে।
একটা গোলাপ বানানো শেষ করল মিনা। তারপর কাঁচি দিয়ে পাপড়িগুলো ছাঁটার জন্যে বাক্সটি আরো কাছে টেনে আনে। ত্রিনিদাদও ওর বাক্সটি নিচে রেখে মিনার সাথে হাত লাগায়।
মিনা ত্রিনিদাদের বাক্সটি দেখে।
‘জুতা কিনলি নাকি?’ জিজ্ঞেস করে সে।
‘এটার ভেতরে মরা ইঁদুর’, বলে ত্রিনিদাদ।
ত্রিনিদাদ ভাল পাপড়ি বানাতে পারে, মিনা তাই সবুজ কাগজ ছেঁদা করে ভেতরে তার ঢুকিয়ে পাপড়ি বসানোর কাঠামো বানাতে থাকল। তারা নিঃশব্দে কাজ করতে থাকল, খেয়ালই করল না সূর্যের আলো এসে কখন পড়েছে বসার ঘরের পারিবারিক ফোটোগ্রাফগুলোর ওপর। কাঠামো বানানো শেষ করে মিনা ত্রিনিদাদের দিকে মুখ ঘোরাল, ওর দৃষ্টিতে কাজবহির্ভূত কিছু একটা ছিল। ত্রিনিদাদ কিন্তু নজরকাড়া নৈপুণ্যের সাথে কাজ চালিয়ে যেতে থাকল, মিনার আঙুলে-ধরা পাপড়িগুলোকে একটুও না নাড়িয়ে। মিনা খেয়াল করল বান্ধবীর পুরুষালি জুতোজোড়া। চোখাচোখি হবে, এমনটা ভেবে ত্রিনিদাদ মাথা তুলল না, নিজের পা যথাসম্ভব পেছনে চেপে রাখল, এবং এভাবে কাজ শেষ করল।
‘ব্যাপার কি?’ বলল সে।
মিনা তার দিকে ঝুঁকে এল।
‘সে চলে গেছে’, বলল মিনা।
ত্রিনিদাদের হাত থেকে কাঁচিটা তার কোলের উপর পড়ে গেল।
‘না’।
‘চলে গেছে সে’, মিনা আবার বলল।
শূন্য দৃষ্টিতে ত্রিনিদাদ মিনার দিকে তাকিয়ে থাকে। ভুরু কোঁচকানো, পুরো দুইভাগে ভাগ হয়ে গেছে ভুরু ওর।
‘এখন কী হবে?’ ত্রিনিদাদের প্রশ্ন।
মিনা দৃঢ় গলায় উত্তর দিল।
‘কিছুই না’।
বেলা দশটার আগেই ত্রিনিদাদ বিদায় নিল।
ত্রিনিদাদের নৈকট্যের ভারমুক্ত হয়ে মিনা মরা ইঁদুরগুলি টয়লেটে ফেলে দিতে চলল, যাবার আগে দাদীর কাছে একমুহূর্ত থামল। অন্ধ দাদী তখন গোলাপঝোঁপে ছাঁট দিচ্ছিলেন।
‘বাজি ধরতে পারি, এই বাক্সে কী আছে তুমি বলতে পারবে না’, পাশ দিয়ে যেতে যেতে মিনা ওর দাদীকে বলল।
বাক্সটি নাড়ায় মিনা।
অন্ধ মহিলা মনোযোগী হতে শুরু করে। ‘আবার নাড়া দে’, বলল দাদী। মিনা বাক্সের মরা ইঁদুরগুলি আবার নাড়ায়, কিন্তু পরপর তিনবার শুনেও দাদী বুঝতে পারল না বাক্সে কী আছে।
‘গতরাতে চার্চে পাতা-ফাঁদে ধরা-পড়া ইঁদুর এইগুলো’, মিনা বলে দাদীকে।
ফিরে আসার সময় সে অন্ধ দাদীর পাশ দিয়ে নিঃশব্দে হেঁটে যায়। কিন্তু দাদী ওকে ঠিকই অনুধাবন করে এবং পেছন পেছন যায়। এভাবে বসার ঘরে, যেখানে মিনা একটা বন্ধ জানলার পাশে বসে গোলাপগুলো তৈরি করছে।
‘মিনা’, অন্ধ দাদী বলেন, ‘সুখী থাকতে চাইলে কখনই অচেনা কারো সামনে স্বীকারোক্তি দিস না’।
কিছু না বলে মিনা তাকিয়ে থাকল ওর দাদীর দিকে। অন্ধ মহিলাটি ঠুকে ঠুকে মিনার সামনের চেয়ারে গিয়ে বসল এবং ওর কাজে হাত লাগাতে উদ্যোগী হল। কিন্তু মিনা তা হতে দিল না।
‘তোকে অস্থির লাগছে’, অন্ধ দাদী বলে। ‘প্রার্থনায় যাস নি কেন?’ জিজ্ঞেস করে সে।
‘এটা তুমিই ভাল জান।’
‘এটা যদি জামার হাতা ভেজা থাকার কারণে হত, তাহলে তুই ঘরের বাইরে যেতে দ্বিধা করতিস না’, অন্ধ মহিলা বলতে থাকল, ‘কেউ একজন তোর জন্যে পথে অপেক্ষা করছিল, যার কোন বিষয় তোকে ছন্নছাড়া করে দিয়েছে আজ।’
মিনা দাদীর অন্ধ চোখের সামনে হাত দোলাল, মনে হল যেন মুছে দিচ্ছে কোনো অদৃশ্য কাঁচ।
‘তুমি একটা ডাইনী’, বলল মিনা।
‘সকালে দু’বার টয়লেটে গেছিস’, অন্ধ দাদী বলে। ‘তুই একবারের বেশি কখনই যাস না’।
মিনা গোলাপ বানাতেই থাকল।
‘আলমারির ড্রয়ারে কী রেখেছিস, দেখাবি আমায়?’ দাদী বলে।
মিনা ধীরেসুস্থে ওর অন্তর্বাসের ভেতর থেকে চাবি তিনটা বের করে এবং দাদীর হাতে দেয়। দিয়ে দাদীর হাতের মুঠো সজোরে বন্ধ করে দেয়।‘যাও, নিজের চোখে দেখে আসো’, বলে মিনা।
‘আমার চোখ তো টয়লেটের নিচে দেখতে পায় না’।
মিনা চোখ তুলল এবং তোলার পর ওর একটা অদ্ভূত অনুভূতি হল। মিনা অনুভব করে, অন্ধ মহিলাটি জানে যে এই মুহূর্তে মিনা তার দিকে তাকিয়ে।
‘টয়লেটের নিচে গিয়ে দেখ না কেন, আমার বিষয়ে যখন তোমার এত আগ্রহ’, বলে মিনা।
দাদী এই কথায় আমল দিল না।
‘রাতে শুয়ে শুয়ে ভোর পর্যন্ত কী যেন লিখিস তুই’, বলে দাদী।
‘তুমি তো বাতি নিভিয়েই দাও’, মিনা বলে।
‘আর সাথেসাথেই তুই হারিক্যানটা জ্বালাস’, অন্ধ দাদী বলে। ‘হারিক্যানের আলোয় সারারাত হৃদয়ের গতির সাথে লিখে যাস তুই’।
মিনা শান্ত থাকার আপ্রাণ চেষ্টা করল। ‘চমৎকার’, মাথা না তুলেই বলল সে, ‘বুঝলাম তাইই করি আমি। তাতে হয়েছে কি?’
‘কিছুই না’ অন্ধ দাদী নিঃশ্বাস নেন। ‘শুধু তোর প্রথম-শুক্রবারের প্রার্থনা মিস হয়েছে।’
দুইহাতে মিনা সুতার গুটি, কাঁচি, আর শেষ-না-হওয়া কাজগুলো নিয়ে উঠে পড়ে। সবকিছু সে বাক্সে রেখে সে অন্ধ মহিলাটির মুখোমুখি হয়। ‘টয়লেটে আমি কেন গিয়েছিলাম, শুনতে চাও?’ জিজ্ঞেস করে মিনা। দু’জনেই একটা টানটান অবস্থার মধ্যে কিছুণ থাকে, যতণ না মিনা নিজেই ওর করা প্রশ্নটির জবাব দেয়:
‘হাগতে গিয়েছিলাম’।
অন্ধ মহিলা চাবি তিনটা বাক্সের ভেতর ছুঁড়ে দেয়। ‘এটা একটা ভাল অজুহাত হতে পারত’, বিড়বিড় করতে করতে দাদী রান্নাঘরের দিকে এগোয়। ‘আমি এটা বিশ্বাস করতাম যদি এই প্রথমবার তোকে আমি কসম কাটতে শুনতাম’। বারান্দার উল্টোদিক থেকে মিনার মা হেঁটে আসে, হাতে অনেকগুলো কাঁটাওলা গোলাপ।
‘কী কথা হচ্ছে?’ মিনার মা জিজ্ঞেস করে।
‘আমি একটা পাগল’, মিনার অন্ধ দাদী এবার নিজের মেয়ের উদ্দেশ্যে বলে। ‘কিন্তু যতক্ষণ না পাথর ছোঁড়া শুরু করি, ততদিন পর্যন্ত কিন্তু তোরা আমায় পাগলা গারদে পাঠানোর কথা ভাবতে পারবি না’।
২টি মন্তব্য:
পাওয়া গেলো আপনার খোঁজ :)
দারুন হইছে সাইটটা... অনুবাদ ও...
ধন্যবাদ তারেক। কাছে থাকুন। সক্রিয় ও সরব থাকুন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন